“আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অস্তিত্ব প্রমাণ করে, নারীদের এখনো অনেক কিছু চাওয়া-পাওয়া বাকি রয়ে গেছে”

৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এ বছরের আন্তর্জাতিক নারী দিবসের থিম হচ্ছে, “ব্রেক দ্য বায়াস”। অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাভাষী অভিবাসী নারীরা কী রকম সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে? আর, অস্ট্রেলিয়ায় কর্মক্ষেত্রে নারীরা কি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়? কী রকমের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়? এসব নিয়ে এসবিএস বাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন কয়েকজন বাংলাভাষী নারী।

Halima, a cleaning worker of the city corporation, is seen sweeping the streets at night in the capital Dhaka. (Photo by Piyas Biswas / SOPA Images/Sipa USA)

Halima, a cleaning worker of the city corporation, is seen sweeping the streets at night in the capital Dhaka. Source: AAP Image/Piyas Biswas/SOPA Images/Sipa USA

সিডনির সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে এবার দু’জন বাংলাদেশী নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের একজন, কাম্বারল্যান্ডের রিজেন্টস পার্ক ওয়ার্ড থেকে প্রথমবার কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়া লেবার পার্টির ড. সাবরিন ফারুকি আন্তর্জাতিক নারী দিবস সম্পর্কে বলেন,

“সবাইকে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শুভেচ্ছা। আমি সাবরিন ফারুকি। একজন নারী হিসেবে, একজন সমাজকর্মী হিসেবে এবং একজন লোকাল গভার্নমেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে আমি চাব, আমরা সবাই যেন আমাদের সমাজে যে বিভিন্ন কালচারাল বায়াস কাজ করে, সে কালচারাল বায়াসগুলো দূর করার পিছে কাজ করে। কারণ, এ বায়াসগুলো আমাদের নারীদের উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।”
২০২১ সালে ফিমেল ডিফেন্স লিডার অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিস্ট তামান্না মোনেম। এর আগে ডিফেন্স কানেক্ট তাকে রাইজিং স্টার অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করেছিল।

কুইন্সল্যান্ড আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স হাব-এর স্ট্রাটেজি অ্যান্ড পার্টনারশিপস ম্যানেজার তামান্না মোনেম বলেন,

“বাংলাভাষী নারীরা অনেক ধৈর্যশীল, বুদ্ধিমতি, তারা একসঙ্গে বহু কাজ করতে পারেন এবং ঘরে-বাইরে সবকিছু সুন্দর করে মিলিয়ে চলতে পারেন। এখানে সাধারণত যে সমস্যা হয় তা হলো, আমাদের কিছু অবচেতন পক্ষপাতের সম্মুখীন হতে হয়। রিক্রুটমেন্ট এজেন্সিগুলো অনেক সময় আমাদের শিক্ষা-ব্যবস্থা এবং কর্ম-অভিজ্ঞতা অস্ট্রেলিয়ান কন্টেক্সট-এ কনভার্ট করতে পারে না। তাই, বাংলাদেশ এবং সাউথ এশিয়ান নারীরা অনেক যোগ্যতা নিয়ে আসলেও, তাদের কর্মক্ষেত্রে মিড-টু-সিনিয়র লেভেলে ঢুকতে কষ্ট হয়।”

দ্বিতীয়ত, সাপোর্ট সিস্টেম। এখানে নেটওয়ার্ক ডেভেলপ, বিল্ড ও মেইনটেইন করাটা খুব দরকার। আমাদের মেয়েদের এখানে সেই সাপোর্ট নেটওয়ার্ক গড়তে সময় লাগে। অফিসিয়াল নেটওয়ার্ক তৈরি করতে ফ্যামিলি, সোশাল নেটওয়ার্কস এবং ওয়ার্ক ব্যালেন্স করে চলতে হয়। তাই, মেয়েদের প্রায়োরিটি সেট করতে হয়, কোনটা রেখে কোনটা করবে। তবে, প্রফেশনাল সাপোর্ট নেটওয়ার্ক এর খুব দরকার।

তৃতীয়ত, প্রোফাইলিং। আমাদের দেশের মেয়েদের এবং এখানকার মেয়েদের প্রোফাইল এবং তাদেরকে সাপোর্ট করার নেটওয়ার্ক দরকার। সিনিয়র লেভেলে মেয়েদের প্রতিনিধিত্ব খুব কম।

চতুর্থত, সমান সুযোগ। চাকরিতে একই টাইটেল, কিন্তু, ছেলে আর মেয়ের বেতন অনেক ডিফারেন্ট স্কেলে। এটা অনেক বড় সমস্যা।

সাউথ এশিয়ান তো আরও কম। তাই, আমার আজকের একটাই বক্তব্য, আমরা যেটাকে বলি, করে দেখাও, ইংরেজিতে, ওয়াক দ্য টক। শুধু আন্তর্জাতিক নারী দিবসে আমরা যা বলি, আমরা যেন সেটা সারা বছর মেয়েদেরকে অনুপ্রেরণা দেয়। সমান সুযোগ মানে সবকিছু সমভাবে লাগবে। মেয়েদের সাথে, ছেলেরা যারা নারীদেরকে অনুপ্রেরণা দেয়, তাদেরকেও আমাদের স্বীকৃতি দিতে হবে। পক্ষপাতটা এভাবে হ্রাস করতে হবে।”

অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাভাষী অভিবাসী নারীরা কী রকম সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে? এ বিষয়ে মেলবোর্ন থেকে ড. তারান্নুম আফরিন বলেন,

“বাংলাভাষী নারী অভিবাসীদের অনেকেই স্পাউস মাইগ্রান্ট। একারণে তাদের হয়তো ইংরেজিতে তেমনভাবে দখল থাকে না আর অস্ট্রেলিয়ান অ্যাকসেন্ট এর সাথেও তেমন পরিচিত না; আমরা বাংলাদেশীরা যতটুকু পরিচিত ব্রিটিশ বা আমেরিকান অ্যাকসেন্টের সাথে। তাই সবচেয়ে ভালো হয় অস্ট্রেলিয়া এসে কাউন্সিলের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে তাদের কমিউনিটি-বেসড প্রোগ্রামগুলোতে পার্টিসিপেট করা। এতে প্রথমত, ভাষার জড়তা কাটবে আর দ্বিতীয়ত, নেটওয়ার্কিং বাড়বে, যা আল্টিমেটলি কনফিডেন্স বাড়িয়ে দেবে বহুগুণ।”
অস্ট্রেলিয়ায় কর্মক্ষেত্রে নারীরা কি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়? কী রকমের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়? এ সম্পর্কে ড. আফরিন বলেন,

“কর্মক্ষেত্রে নারীদের সমস্যা সব দেশে মোর ওর লেস একই রকম। সেক্ষেত্রে ইন্টারপার্সোনাল স্কিল ডেভেলপ করতে হবে। জব এবং এই রিলেটেড আইন-কানুনগুলো জানতে হবে, যাতে এমপ্লয়ার এবং কো-ওয়ার্কাররা তাকে ফেয়ারলী ট্রিট করছে কিনা তা বোঝা যায়। সেই সাথে অর্গানাইজেশনের এক্সপেকটেশনটাও ক্লিয়ার হয়ে নেয়া উচিত। আরেকটা বড় ব্যাপার হচ্ছে, বাচ্চাকে কোথায় রেখে আসবে সেই চিন্তা। এক্ষেত্রে আমি অফিসের কাছে চাইল্ডকেয়ারকে প্রাধান্য দেই। যেকোনো প্রয়োজনে দ্রুত ছুটে যাওয়া যায়। আর মানসিকভাবেও মা অনেক নির্ভার থাকে।”

শুদ্ধ চর্চা, সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ এবং নান্দনিক কিছু সৃষ্টির প্ল্যাটফর্ম তৈরীর স্বপ্ন নিয়ে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সৃষ্টি হয়েছিল ফেসবুকভিত্তিক সাহিত্যচর্চার গ্রুপ ‘পেন্সিল’।

সেই সময় থেকে আলো ছড়ানো, পারস্পরিক সহমর্মিতা, পরিচ্ছন্ন মত-বিনিময়ের জন্যে লেখিয়ে এবং পাঠকদের নিয়ে এখন পর্যন্ত এগিয়ে চলেছে পেন্সিল। নানা বয়সের, মতাদর্শের, ভিন্নমাত্রা ও রঙের মানুষের সমাবেশ ঘটেছে এখানে। জমাট আড্ডা, গঠনমূলক আলোচনা, সাহিত্যের তর্ক আর হাসি-ঠাট্টায় প্রতিনিয়ত ভরে উঠছে পেন্সিলের দেয়াল। পেন্সিলের লক্ষ্য খুব সাধারণ আর একই সাথে অসাধারণ, লক্ষ্য হলো প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতির চর্চা ছড়িয়ে দেওয়া। সময়গুলো সৃজনশীল ইতিবাচকতায় ভরিয়ে তোলা। এরই ধারাবাহিকতায় এগিয়ে চলছে পেন্সিল অস্ট্রেলিয়া।
পেন্সিল অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডমিন সাকিনা আক্তার বলেন,

“আন্তর্জাতিক নারী দিবসে গর্ববোধ করছি অনুসরণীয় এবং অনুকরণীয় নারীদের সাফল্য অবলোকন করে। এই সাফল্য পরিবারের একজন সদস্য হাওয়া থেকে শুরু করে কর্ম ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অর্জন হতে পারে। বিশ্বব্যাপী এদিনটি উদযাপনের লক্ষ্যে হচ্ছে, সকল ক্ষেত্রে সম-অধিকার স্থাপন, সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন।”

তিনি আরও বলেন,

“বিগত ২১ বছর ধরে বিভিন্ন রকমের মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কাজ করে যাচ্ছি আমি। টেলিকমিউনিকেশন দিয়ে শুরু হয়েছিল আমার কর্মজীবনের যাত্রা,  প্রায় ৯ বছরের অধিক সময় ধরে এখন প্রপার্টি ইনভেসমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছি। অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাভাষী অভিবাসী নারী হিসেবে জীবনে আমি নানারকমের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। সব ধরনের সমস্যার সহজ সমাধান ‘নিজেকে ভালবাসতে হবে, এটা  মনুষ্যত্বের মূলমন্ত্র আমার কাছে’। সততা, বিচক্ষণতা, কর্মদক্ষতা, দায়িত্ববোধ, জীবনের মূল্যবোধ দিয়ে খুব সহজে সমাধান করা যায় যেকোনো সমস্যা।”

তার মতে,

“নিজের অধিকারটা বুঝতে হবে, অসুবিধার কথাগুলো তুলে ধরতে হবে। ভাষাগত, শিক্ষাগত, আর্থসামাজিক বা অন্য যেকোন প্রতিবন্ধকতা থাকলে, সেটা উত্তরণে সচেষ্ট হতে হবে নিজেকেই। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ মানুষকে আরও সাফল্যমণ্ডিত করে, এটা আমার বিশ্বাস। একটু অনুভূতিশীল, সংবেদনশীল হয়ে ভালোবাসার সাথেও গড়ে তোলা যায় স্বপ্নের পাহাড় সফলভাবে। বিশ্বের প্রতিটি নারী মাথা উঁচু করে এগিয়ে যাক সর্বক্ষেত্রে নিরাপদে স্বনির্ভরতায়।”
মেলবোর্নের ঝরনা  পিউরিফিকেশন বলেন,

“আন্তর্জাতিক নারী দিবসের অস্তিত্ব প্রমাণ করে যে নারীদের এখনো অনেক কিছু চাওয়া-পাওয়া বাকি রয়ে গেছে।”

“অস্ট্রেলিয়াতে বাংলাভাষী অভিবাসী নারীরা তাদের ব্যক্তিগত জীবন এবং কর্মক্ষেত্রে নিজ নিজ সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। অন্যান্য জাতির নারীদের মত বাংলাভাষী কিংবা বাংলাদেশি অভিবাসী নারীরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। এই সমস্যাগুলো পরিবারের থেকেও হতে পারে। যেমন, আমাদের বাঙালি কৃষ্টির সাথে অস্ট্রেলিয়ান কৃষ্টির অথবা সংস্কৃতির জীবন-যাপনের চলাফেরার বেশ কিছু পার্থক্য মেনে চলতে হয়।”

“কিন্তু, অস্ট্রেলিয়ান জীবন যাত্রার ক্ষেত্রে নারীদের সমান অধিকার প্রাপ্য সেটা যেকোন অভিবাসী নারীদের অধিকার। দৈনন্দিন জীবনে চলাফেরার ক্ষেত্রে আমাদের বাংলাদেশি মেয়েরা অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত মেয়েদের সাথে সামাজিক এবং কর্মক্ষেত্র চলাফেরা করছেন। কর্মক্ষেত্র বাঙালি মেয়েরা নারীরা পশ্চিমা বেশ-ভূষণ ধারণ করতে বাধ্য হচ্ছেন এবং অনায়াসে সাবলীলভাবেই তা করছেন। এতে তাদের বাঙালিত্ব কোন দিক থেকে খর্ব হচ্ছে না, বরং দেখা যাচ্ছে বাঙালিয়ানার প্রতি আমাদের যে বন্ধন, সেটা আমরা আমাদের সামাজিক পরিসরে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রাখছি।”

তার মতে, অস্ট্রেলিয়াতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাঙালি নারীরা তাদের সেই বাঙালিত্বকে সুন্দরভাবে তুলে ধরছেন এবং পারিবারিকভাবে পশ্চিমা এবং নিজস্ব যে পরম্পরা আছে সেটার সুন্দর সংমিশ্রণে তাদের সন্তানের লালন-পালন করছেন।

“তারপরও চ্যালেঞ্জ তো রয়ে যায় অনেক ক্ষেত্রে। অস্ট্রেলিয়াতে আমরা ডাইভার্স কালচারাল সামাজিক ব্যবস্থার মধ্যে জীবন-যাপন করি। অনেক সময় এই ডাইভার্স কালচারগুলোকে বুঝে উঠতে এবং তাদের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হয়তো বা কিছুটা সময় লাগে আর নয় তো আমরা নিজেদেরকে গুটিয়ে নিই।”
“সেটা কিন্তু নারীদের ব্যাপারে নয়, পুরুষদের ব্যাপারে হতে পারে। কিন্তু আমাদের সংস্কৃতি আদব-কায়দা, অনুভূতি, সংবেদনশীলতা, সবকিছু মিলিয়ে আমাদের বাংলাদেশি বাঙালি নারীরা নিজেদের স্থান করে নিচ্ছে প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত।”

“তাই এ আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সকল নারীদের প্রতি রইল আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন।”

সিডনির অলাভজনক প্রতিষ্ঠান স্পিক আপ ইনকর্পোরেটেড-এর প্রেসিডেন্ট আসমা আলম কাশফি বলেন,

“নারী হল পরিবারের স্তম্ভ, তাঁর অনুপ্রেরণা ছাড়া কোনও কিছু সম্ভব নয়। তাই তাঁকে জানাই নারী দিবস এর অনেক অনেক শুভেচ্ছা। মেয়েরা সব সময়ই কোমল হৃদয় হয়। তাঁরা ভালবাসার মানুষকে সব সময় মনের গভীরে স্থান দেয়। একজন আদর্শ নারী হয়ে ওঠো (আন্তর্জাতিক নারী দিবস)। হয়ে ওঠো সবার অনুপ্রেরণা। আজকের দিনে এটাই চাই। তুমি আমার ক্ষমতার উৎস, তুমি আমার ভালবাসার অনন্ত নদী। আন্তর্জাতিক নারী দিবস এর অনেক শুভেচ্ছা রইল। এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর ফুল আর সবচেয়ে বর্ণময় কবিতার চেয়েও আকর্ষণীয় তুমি। নারী দিবসের শুভেচ্ছা রইল।”

মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি অফ আর্টসের ড. নীরা রহমান বলেন,

“বাঙালি নারীরা অস্ট্রেলিয়াতে অভিবাসন করে এসে কী কী ধরনের প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়, এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমে যা বলতেই হবে, সমস্যা তো থাকেই, অধিকাংশের। তারপর, সাংস্কৃতিকভাবে বা সামাজিকভাবেও নতুন দেশে নানাবিধ পার্থক্য মেনে নেবার এবং নিজেদেরকে মানিয়ে নেবার যে একটা নিরন্তর প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে, নারী-পুরুষ নির্বিশেষেই যান।”

তার মতে, নারীদের কিছু কিছু সামাজিক প্রতিবন্ধকতা বেশি থাকে,  যেগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়।
“যেহেতু নারীর কিছু কিছু সামাজিক প্রতিবন্ধকতা বেশি থাকে, বা বাংলাদেশের সেভাবে, বাংলাদেশে বা ভারতে বেড়ে ওঠা নারীরা যে যে সামাজিকতা বা সামাজিক প্রেক্ষিতগুলোর সাথে যেভাবে পরিচিত, নতুন দেশে তো ঠিক সে রকম নয়। তো ঐ ব্যাপারটা তো সামাজিক, ভাষাগত, সাংস্কৃতিক প্রতিবন্ধকতা এবং সেটার সাথে মানিয়ে নেবার ব্যাপারটা তো রয়েছেই।”

তবে, নতুন একটি দেশে আসার পর নারীরা আর্থিক সংগ্রামে নিপতিত হন, বলেন তিনি।

“কিন্তু, আমি এছাড়া যে ব্যাপারগুলো বলবো, যেগুলো আসলে নারীদের জন্য নতুন দেশে আসবার পরে খুব জরুরি হযে দাঁড়ায় যে, নতুন একটা দেশে আসবার পরে আর্থিক টানাপোড়েন বা আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য লাভের যে একটা প্রচেষ্টা বা যে একটা চেষ্টার মধ্য দিয়ে যে-কোনো অভিবাসী পরিবারকে যেতে হয়, সেখানে এই যে নারীর অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার যে সংগ্রামটা সেটা কিন্তু খানিকটা পুরুষের চেয়ে আলাদা। এবং সেটার সাথে ঐ যে যেটা আমি একটু আগে বললাম যে, ভাষাগত, সামাজিক, সাংস্কৃতিক পার্থক্যের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে এ আর্থিক স্বচ্ছলতা বা স্বাধীনতা প্রাপ্তির যে সংগ্রামটা এটা একটা আমি বলবো যে, এটা একটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষিত, অভিবাসী নারীদের জন্য।”

“নতুন করে নতুন দেশে এসে তো নতুন করে বন্ধু করতে হয়, সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করতে হয়, এবং অধিকাংশ মেয়েরাই তো যখন এখানে আসেন বা যেকোনো দেশে অভিবাসী হন, আত্মীয়-স্বজন, পরিজন কেউই আসলে থাকে না। তো এই যে একদম নতুন করে নিজের মতো করে পাশে দাঁড়ানোর মতো, সামাজিক, মানসিক, আত্মিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতার একটা সংযোগ গড়ে তোলা, এটা মেয়েদের জন্য অত্যন্ত জরুরি এবং এই গড়ে তোলাটা আমি বলবো যে, অভিবাসী মেয়েদের জীবনে একটা খুব চ্যালেঞ্জ।”

এছাড়া, নতুন একটি দেশে এসে নতুন সংস্কৃতির মাঝে বাংলা ভাষা ও সাংস্কৃতিক শিক্ষা সন্তানদের মাঝে পরিবাহিত করার বিষয়টিকেও অভিবাসী মায়েদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।

Follow SBS Bangla on .

এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: 

আমাদেরকে অনুসরণ করুন 

Share
Published 8 March 2022 5:36pm
Updated 8 March 2022 7:48pm
By Sikder Taher Ahmad

Share this with family and friends