অস্ট্রেলিয়ায় ১ জুলাই থেকে আয়কর সংক্রান্ত যে পরিবর্তনগুলো আসতে চলেছে

A 2015-2016 financial year diary is featured with reading glasses in a stock image in Sydney, Wednesday, Jan. 13, 2016. (AAP Image/Sam Mooy) NO ARCHIVING

End of financial year. Source: AAP/ Sam Mooy

Get the SBS Audio app

Other ways to listen

জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় আয়করের ক্ষেত্রে বেশ কিছু পরিবর্তন কার্যকর হতে চলেছে। এই পরিবর্তনগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্রিপ্টোকারেন্সির উপর কর, ক্যাশ বুস্ট, বেতন ও মজুরি বৃদ্ধি এবং সুপারঅ্যানুয়েশান। প্রায় সবগুলো পরিবর্তনই অস্ট্রেলিয়ানদের নানাভাবে প্রভাবিত করবে।


গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো:

  • সুপার গ্যারান্টি রেট ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে হবে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ
  • শর্তপূরণ সাপেক্ষে প্রায় ১০ মিলিয়ন অস্ট্রেলীয় নাগরিক এককালীন ৪২০ ডলারের কর রেয়াত পেতে পারেন
  • জবসিকার পদ্ধতিকে একটি পয়েন্ট-ভিত্তিক অ্যাক্টিভেশন সিস্টেমে রূপান্তরিত করা হবে

প্রতিটি নতুন অর্থবছরই অস্ট্রেলিয়ার আয়কর ব্যবস্থায় নতুন পরিবর্তন নিয়ে আসে এবং ২০২২ সালও এর ব্যতিক্রম নয়।

এ বছর অস্ট্রেলিয়ান ট্যাক্স অফিস মূল ফোকাস হিসাবে ক্যাপিটাল গেইন বা মূলধনী লাভকে চিহ্নিত করেছে, যার মধ্যে ক্রিপ্টোকারেন্সিও রয়েছে।

১ জুলাই থেকে কার্যকর হওয়া আয়কর সংক্রান্ত নিয়মগুলোর মধ্যে এটিও একটি।
অস্ট্রেলিয়ান ট্যাক্স অফিসের সহকারী কমিশনার টিম লোহ বলেন, অন্যান্য পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে সুপারঅ্যানুয়েশান ফান্ড।

সুপার গ্যারান্টির হারও ১০ শতাংশ থেকে বেড়ে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ হবে। যার মানে হচ্ছে,  নিয়োগকর্তাদের জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে সমস্ত বেতনের জন্যে সুপার পেমেন্ট হিসেব করার সময় নতুন হারটি ব্যবহার করতে হবে। এমনকি এই তারিখের আগে সমাপ্ত হওয়া কাজের জন্যেও এই নিয়মটি প্রযোজ্য হবে।
আর এই তারিখ থেকেই ষাট বা তার চেয়ে বেশি বয়সীরা তাঁদের বাড়ি বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ সর্বোচ্চ তিন লক্ষ ডলার পর্যন্ত ‘ডাউনসাইজার কন্ট্রিবিউশান’ হিসেবে সুপারঅ্যানুয়েশান ফান্ডে জমা করতে পারবেন।

এর আগে ডাউনসাইজার কন্ট্রিবিউশানের জন্যে সর্বনিম্ন বয়সসীমা ছিল ৬৫ বছর।

এছাড়াও ১ জুলাই থেকে ১০ মিলিয়নেরও বেশি অস্ট্রেলীয় নাগরিক এককালীন ৪২০ ডলার ট্যাক্স অফসেট বা কর রেয়াত পেতে পারেন।

এই অফসেটের মানে হচ্ছে কারো করযোগ্য আয়ের হিসাবে রেয়াত দেয়া। প্রচলিত নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ট্যাক্স-অফসেটের সাথেই এই রেয়াত যোগ করা হবে।

ন্যূনতম মজুরিও ৫ দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ঘন্টায় ২১ দশমিক ৩৮ ডলারে উন্নীত হবে।  যার ফলে  একজন পূর্ণকালীন কর্মীর সাপ্তাহিক ৩৮ ঘন্টা কাজের জন্যে তার বেতন সপ্তাহে ৪০ ডলার বৃদ্ধি পাবে।

এছাড়া চাইল্ডকেয়ার ভর্তুকির পরিমাণও এবারে বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে।

যেসব পরিবারে পাঁচ বছর বা তার চেয়ে কম বয়সী একাধিক শিশু রয়েছে, তাঁরা দ্বিতীয় ও পরবর্তী শিশুদের জন্যে উচ্চতর হারে চাইল্ড কেয়ার সাবসিডি বা সিসিএস পাবেন।

এছাড়াও জবসিকার প্রকল্পেও বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

বর্তমানে জবসিকার ভাতা পেতে হলে তালিকাভুক্তদের প্রতি মাসে অন্তত ২০টি চাকরিতে আবেদনের শর্ত পূরণ করতে হয়। কিন্তু এ নিয়ম বদলে এখন থেকে তাদের জন্যে একটি পয়েন্ট-বেজড্‌ অ্যাক্টিভেশান সিস্টেম বা পিবিএএস পদ্ধতি চালু করা হবে।

এর আওতায় জবসিকার ভাতা পেতে হলে তাদেরকে ১০০ পয়েন্ট পেতে হবে এবং প্রতি মাসে কমপক্ষে পাঁচবার চাকরিতে আবেদন করতে হবে।

আর পয়েন্ট পাওয়ার জন্যে ত্রিশটিরও বেশি কাজের একটি তালিকা রয়েছে, যেখানে প্রতিটি কাজের ওপরে নির্দিষ্ট পয়েন্ট থাকবে। সেগুলো সম্পন্ন করলেই পয়েন্ট যোগ হতে থাকবে।

শেয়ার বাজের লগ্নি করা শেয়ারগুলো যখন লোকসানে থাকে, আয়কর রিটার্নের সময় সেগুলো ব্যবহার করা যায়। হেইচ এন্ড আর ব্লক-এর ট্যাক্স কমিউনিকেশান্সের পরিচালক মার্ক চ্যাপম্যান বলেন, শেয়ার বাজারের লোকসানকে ক্যাপিটাল গেইন বা মূলধনী লাভের উপরে কর রেয়াত পেতে কাজে লাগানো যায়।

হ্যারিসন ডেল ক্যাডেনা লিগ্যালের একজন আয়কর বিষয়ক আইনজীবী। তিনি ক্রিপ্টো কারেন্সির কেনাবেচা ও আয়করের ক্ষেত্রে নতুন পরিবর্তনের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মনোযোগী হবার পরামর্শ দিয়েছেন।

কারণ এ বিষয়ে কিছু ভুল ধারণার জন্যে বিনিয়োগকারীরা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে বলে মি: ডেল জানিয়েছেন। তাই সতর্ক থাকাই শ্রেয়।

২০২২ সালে আয়কর রিটার্ন মূল্যায়নের ক্ষেত্রে, ATO যে জিনিসগুলো বিবেচনায় আনবে সেই  তালিকায় রয়েছে  হিসাব-রক্ষণ, ভাড়া থেকে আয়-ব্যয় এবং কাজ-সম্পর্কিত খরচ।

আর ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যে মার্ক চ্যাপম্যানের পরামর্শ হচ্ছে, অর্থবছর শেষ হওয়ার আগে অর্থাৎ ৩০ জুন বিকাল ৫টার আগেই যদি ব্যবসায় ব্যবহারের জন্যে কোনও কিছু কেনা হয়ে থাকে, তাহলে সেটির বিপরীতে তাৎক্ষণিক ভাবে আয়কর থেকে রাইট-অফ দাবি করার সুযোগ রয়েছে।

মার্ক চ্যাপম্যান আরও বলেন, করদাতারা যে আয়কর পরিশোধ করছেন এবং তাদের যা পরিশোধ করা উচিৎ বলে ATO মনে করে, এই দু’টি সংখ্যার পরিমাণে বিশাল পার্থক্য রয়েছে।

আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার আগেই সব প্রস্তুতি ঠিকঠাক সম্পন্ন করলে পরবর্তীতে জটিলতা এড়ানো সম্ভব।

পুরো প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ার বাটনে ক্লিক করুন।


এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: 

আমাদেরকে অনুসরণ করুন । 

Share