বিশ্ব জুড়ে প্রবল রূপ ধারণ করতে যাচ্ছে করোনাভাইরাসের ডেল্টা স্ট্রেইন

corona virus 1

A 3d render of a Chronavirus or COVID-19. Source: Digital Vision

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত বিশ্বে প্রায় চার মিলিয়ন লোক মারা গেছে। কোভিড-১৯ এর বিভিন্ন স্ট্রেইনের বিরুদ্ধে বিশ্ব জুড়ে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষগুলো সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ায় তিনটি বিশেষ স্ট্রেইন নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। তবে, ডেল্টা স্ট্রেইন অচিরেই বিশ্বে প্রবল রূপ ধারণ করতে যাচ্ছে।


বিশ্বে কোভিড-১৯ এর প্রতি সবার নজর আসার পর প্রায় ১৮ মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে। চীনের উহান সিটিতে এর প্রাদূর্ভাবের পর এটি বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে এবং বিভিন্ন দেশে স্বাস্থ্য-ব্যবস্থায় প্রবল চাপ সৃষ্টি করেছে।

এ পর্যন্ত ১৮০ মিলিয়ন লোক কোনো না কোনোভাবে করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। আর, এতে আক্রান্ত হয়ে বিশ্ব জুড়ে এ পর্যন্ত প্রায় ৪ মিলিয়ন লোক মারা গেছে।

এই সময়টিতে ভাইরাসটি শুধু ছড়িয়ে পড়ে নি, বরং, এর পাশাপাশি এটির অনেক মিউটেশন বা রূপান্তরও ঘটেছে। আসল কোভিড-১৯ স্ট্রেইনের অনেকগুলো ভ্যারিয়েন্ট সৃষ্টি হয়েছে, যেগুলো সংক্রমণযোগ্য। আর, ধারণা করা হচ্ছে যে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টটি অচিরেই বিশ্বের প্রবল ভ্যারিয়েন্ট হিসেবে আবির্ভূত হবে।

ডেকিন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ক্যাতেরিন বেনেট বলেন, অচিরেই আলফা ভ্যারিয়েন্টটির স্থলে জায়গা করে নিতে যাচ্ছে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টটি।
এটি এখন যুক্তরাজ্যের শতকরা ৯৯ ভাগ এবং রাশিয়ার ৯০ ভাগ সংক্রমণের জন্য দায়ী।

পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের গবেষণা অনুসারে, ডেল্টা স্ট্রেইনটির রিপ্রোডাক্টিভ ভ্যালু যেখানে ৬, সেখানে অন্যান্য রূপান্তরিত ভ্যারিয়েন্টগুলোর এই ভ্যালু ২ থেকে ৩ এর মাঝে।

এর মানে হলো, একজন ব্যক্তি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা সংক্রমিত হলে আরও ছয় ব্যক্তিও এতে সংক্রমিত হবে।

প্রফেসর বেনেট বলেন, অস্ট্রেলিয়ায় আলফা ভ্যারিয়েন্টটি প্রবল রূপ ধারণ করছিল। কিন্তু, এখন তার স্থলে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টটি জায়গা করে নিচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ায় কোভিড-১৯ এর বিভিন্ন প্রাদূর্ভাবের উৎস সন্ধান করে ডেল্টা কিংবা আলফা ভ্যারিয়েন্ট সনাক্ত করা হয়েছে।

এদেশে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টটি দ্রুত প্রবল রূপ ধারণ করছে। তবে, এদেশে কাপ্পা ভ্যারিয়েন্ট নিয়েও সতর্কবার্তা রয়েছে। এটি প্রথমে ভারতে সনাক্ত করা হয়। এটিকে ‘আদার’ ভ্যারিয়েন্টও বলা হয়।
COVID-19 Stay at home order
Source: NSW Government
ইউনিভার্সিটি অফ সিডনি এবং ইমুনাইজেশন কোয়ালিশনের সংক্রামক রোগব্যাধি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর রবার্ট বয় এর উৎস ব্যাখ্যা করেন।

কোভিড-১৯ এর জন্য একটি আর-এন-এ ভাইরাস দায়ী। সেই একই ভাইরাসের কারণে ইনফ্লুয়েঞ্জা হয়।

প্রফেসর বয় ব্যাখ্যা করেন যে, আর-এন-এ ভাইরাসগুলো ‘খুব সহজেই’ রূপান্তরিত হতে চায়। এ জন্যই এত বেশি সংখ্যক কোভিড-১৯ ভ্যারিয়েন্ট দেখা যায়। যেমন, বিটা ও গামা ভ্যারিয়েন্ট অন্যান্য দেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটিয়েছে।

অস্ট্রেলিয়ানদের প্রতি টিকাগ্রহণের জন্য প্রফেসর বেনেট ও প্রফেসর বয়— দু’জনেই আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেন যে, এসব ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে, যদি পরিপূর্ণভাবে গ্রহণ করা হয়, সেক্ষেত্রে অ্যাস্ট্রা জেনেকা এবং ফাইজার ভ্যাকসিন অত্যন্ত কার্যকর।

প্রফেসর বেনেট আরও বলেন, যুক্তরাজ্যের তথ্য-উপাত্ত থেকে দেখা যায়, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৮৩ শতাংশই টিকা গ্রহণ করেন নি। আক্রান্তদের মাঝে ৪ শতাংশেরও কম লোক পরিপূর্ণভাবে টিকা গ্রহণ করেছিলেন।

প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .

Share