দুই দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো বিদেশে জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়ানদের অনুপাত কমেছে

News

Where do we all come from Source: Pixabay

Get the SBS Audio app

Other ways to listen

অস্ট্রেলিয়ান ব্যুরো অফ স্ট্যাটিস্টিকস থেকে প্রকাশিত জনসংখ্যার তথ্য থেকে দেখা যায় যে বিদেশে জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়ানদের অনুপাত ২০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে প্রথমবারের মতো হ্রাস পেয়েছে। কোভিড মহামারীকেই এই হ্রাসের জন্য দায়ী করা হচ্ছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন যে এটি জাতীয় অর্থনীতিতে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে।


গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো

  • অস্ট্রেলিয়া ২,০০০ সালের পর থেকে এই প্রথমবারের মতো বিদেশে জন্ম নেয়া জনসংখ্যার হ্রাস রেকর্ড করেছে
  • "অস্ট্রেলিয়ার সীমানা আবার খোলার মানে এই নয় যে এই মাইগ্রেশন সংখ্যা রাতারাতি আগের অবস্থায় ফিরে আসবে"
  • অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ডক্টর অ্যালেন বলছেন অভিবাসনের জন্য অস্ট্রেলিয়া এখন পুরানো নীতিতে চলছে, তারা এখনো শেতাঙ্গ নির্ভর এবং সীমাবদ্ধ

গত কয়েক দশক ধরে অস্ট্রেলিয়া বিদেশী অভিবাসনের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠেছে, এবং বিশ্বের অন্যতম প্রধান 'অভিবাসীদের দেশ' হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং নিউজিল্যান্ডের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার নামও উচ্চারিত হচ্ছে।

এখন অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় জনসংখ্যা ২৬ মিলিয়নের কাছাকাছি। তবে অস্ট্রেলিয়া ২,০০০ সালের পর থেকে এই প্রথমবারের মতো বিদেশে জন্ম নেয়া জনসংখ্যার হ্রাস রেকর্ড করেছে।

কোভিড মহামারী বিশ্বজুড়ে অভিবাসনকে থামিয়ে দিয়েছে। মেলবোর্নের ডেমোগ্রাফিক্স গ্রুপের সাইমন কুয়েস্টেনমাচার বলেছেন যে এটি অর্থনীতির জন্য খারাপ খবর।

তিনি বলেন, অনেক শিল্প খাত খুব সমস্যায় আছে অভিবাসনের অভাবের কারণে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলি প্রচুর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হারিয়েছে, যা তাদের আয়ের প্রধান উত্স। অভিবাসীদের অভাব শহরের আবাসন খাতের জন্য উদ্বেগজনক। অভিবাসীদের অভাব হলে পুরো অর্থনীতিতে তার প্রভাব পড়বে।
২০২১ সালের হিসেবে দেখা যায় যে ৭.৫ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান বা জনসংখ্যার ২৯.১ শতাংশ বিদেশে জন্মগ্রহণ করেছে। সংখ্যাটি আগের বছর ২০২০ সাল থেকে দুই লক্ষ কম।

অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর সোশ্যাল রিসার্চ অ্যান্ড মেথডসের ড. লিজ অ্যালেনের মতে, অস্ট্রেলিয়ার সীমানা আবার খোলার মানে এই নয় যে এই মাইগ্রেশন সংখ্যা রাতারাতি আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।

দেশভিত্তিক অভিবাসন অনুসারে ২০২১ সালে বিদেশে জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যে ইংল্যান্ড এখনো এগিয়ে, অস্ট্রেলিয়ার সামগ্রিক জনসংখ্যার প্রায় চার শতাংশ সেখানে জন্মগ্রহণ করেছে।

ভারতে জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়ানদের সংখ্যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, তাদের অনুপাত দ্বিগুণ হয়ে ২.৮ শতাংশে পৌঁছেছে। এই সংখ্যা চীনকে ছাড়িয়ে গেছে এবং চীনে জন্ম নেয়া অস্ট্রেলিয়ানদের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ২.৩ শতাংশ।

বেইজিংয়ের অভিবাসনের সীমা বেঁধে দেয়া ভারত থেকে আসা লোকদের জন্য অভিবাসনের দরজা খুলে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ডঃ যধু সিং নিউ সাউথ ওয়েলসের ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি।

তিনি ১৯৯১ সালে অস্ট্রেলিয়ায় এসেছিলেন এবং এখন অন্যান্য ভারতীয়দের ডাউন আন্ডার বা অস্ট্রেলিয়ায় আসতে বার্তা দিচ্ছেন।

তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়া একটি দুর্দান্ত জায়গা। ২০১০-১১ সালে এই দেশ সম্পর্কে ভারতীয় মিডিয়ার তৈরি করা বাজে কথা উপেক্ষা করুন। এই দেশটি একটি মহান দেশ যেখানে সিস্টেম খুব ভালো, মানুষগুলো ডাউন টু আর্থ, সুযোগ-সুবিধা, স্বাস্থ্য, শিক্ষাব্যবস্থা উন্নত এবং সর্বোপরি এটি একটি কল্যাণ রাষ্ট্র।

ড: সিং বলছেন মহামারীর পরিপ্রেক্ষিতে ভারত থেকে আরও বেশি লোককে এখানে আসতে আকৃষ্ট করতে স্থানীয় ভারতীয় অভিবাসীরা কাজ করতে পারে।

তিনি বলেন, আমরা অস্ট্রেলিয়ায় ভারতের দূত হিসেবে অভিবাসন সিস্টেমটিকে সাহায্য করতে পারি যাতে আরও বেশি লোক এখানে পড়াশোনা বা বসবাসের জন্য আসতে পারে।

তবে অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ডক্টর অ্যালেন বলছেন অভিবাসনের জন্য অস্ট্রেলিয়া এখন পুরানো নীতিতে চলছে, তারা এখনো শেতাঙ্গ নির্ভর এবং সীমাবদ্ধ, এবং এই সমস্যা মেটাতে আরও অনেক কিছু করা দরকার।

তিনি বলেন, অভিবাসনের ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া সম্পর্কে যে নেতিবাচক ধারণা আছে তা কাটিয়ে উঠা সত্যিই কঠিন এবং আমি মনে করি অস্ট্রেলিয়ার জন্য মহামারীর আগের অভিবাসনের পর্যায়ে আসতে অন্তত ৫ বছর লাগবে।

মহামারীর পরে অস্ট্রেলিয়ায় আরও অভিবাসীদের আগমন ঘটবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যেঅভিবাসন সংখ্যা মহামারী-পূর্ব অবস্থায় আনতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার মতো দেশগুলির সাথে অস্ট্রেলিয়াকে প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়তে হবে।

পুরো প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন। 

Follow SBS Bangla on .


এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: 

আমাদেরকে অনুসরণ করুন 

আরও দেখুন:

Share