বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিতে নারীদের অগ্রগতি অব্যাহত, তবে এখনো পাড়ি দিতে হবে অনেক দূর

Dr Noushin Nasiri

Dr Noushin Nasiri Source: SBS

Get the SBS Audio app

Other ways to listen

বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিতে নারীদের সাফল্য উদযাপনে গত সপ্তাহে পালিত হলো উইমেন এন্ড গার্লস ইন সায়েন্স দিবসটি। এক্ষেত্রে যদিও বেশ অগ্রগতি হয়েছে, তবে এখনও দীর্ঘকালীন লিঙ্গ বৈষম্য মোকাবেলায় আরও পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান অব্যাহত আছে।


ডঃ নওশীন নাসিরীর ল্যাবটিতে তিনি ন্যানোস্ট্রাকচার্ড উপকরণগুলি নিয়ে কাজ করছিলেন।

বিজ্ঞানের প্রতি প্রবল আকর্ষণ ছিল এক সময়ের ইরানের এই কৌতূহলী স্কুল ছাত্রীর। আর এটাই ছিল তার ম্যাকুয়েরি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ন্যানোটেক ল্যাবরেটরির শীর্ষস্থান অর্জনের যাত্রা।

তার অনুসন্ধিৎসু প্রকৃতির মনটি তিনি পেয়েছেন তার বাবার কাছ থেকে।
Dr Noushin Nasiri at her graduation with her father Mr Ebrahim Nasiri.
Dr Noushin Nasiri at her graduation with her father Mr Ebrahim Nasiri. Source: supplied by Dr Noushin Nasiri
ছোটবেলায় তিনি সবসময় কীভাবে কোনটা কাজ করে তা প্রশ্ন করতে তাকে উৎসাহিত করতেন।

ডঃ নওশিন বলেন, “আমি বিশ্বাস করি যে তিনিই আমার মধ্যে কৌতূহলের বীজ রোপণ করেছিলেন। তিনি আমাকে শিখিয়েছিলেন যে কোনও বিষয়কে কেবল সত্য হিসাবে গ্রহণ করা নয় বরং বেশিরভাগ সময় প্রতিটি কারণের পিছনে একটি বৈজ্ঞানিক কারণ খুঁজে বের করতে হবে। "

প্রশ্ন করার এই ঐতিহ্য তিনি তার নারী শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দেয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করেন।

“আমি বিশ্বাস করি এটি বেশিরভাগই পিতামাতাদের কাজ। তাই আমাদের খুব ছোটবেলা থেকেই শুরু করতে হবে "।

ড: নওশিন বলেন, অল্প বয়সী মেয়েদের প্রায়শই বিজ্ঞানের মতো বিষয়ে উৎসাহ দেওয়া হয় না।

এই বিষয়টি ফেডারেল সরকার ২০১৮-১৯ বাজেটে উত্থাপন করেছিল।

Science, Technology, Engineering and Maths (STEM) বা স্টেম শিক্ষা এবং ক্যারিয়ারে নারীদের আরও উৎসাহিত করতে ৪.৫ মিলিয়ন ডলার প্যাকেজের অংশ হিসাবে, অধ্যাপক লিসা হার্ভে-স্মিথকে উইম্যান ইন দ্যা স্টেম এম্বাসেডর হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

এই দায়িত্বে এখন তার তৃতীয় বছর চলছে, তিনি বলেন যে অস্ট্রেলিয়াকে এখনও অনেক দীর্ঘ পথ যেতে হবে।

প্রফেসর লিসা হার্ভে-স্মিথ বলেন, "অস্ট্রেলিয়ার স্টেম ইন্ডাস্ট্রি খুব বেশি পুরুষ-অধ্যুষিত, যদিও সেখানে কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে মহিলারা প্রকৃত অর্থে প্রাধান্য পেয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ জৈবিক এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে। তবে সামগ্রিকভাবে, পরিসংখ্যান থেকে পাওয়া সত্যটি হলো অস্ট্রেলিয়ার স্টেম সেক্টরে যোগ্য কর্মীদের মধ্যে নারীদের সংখ্যা ১৬ শতাংশ।"

মহিলারা বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। ড: নওশিন বলেন, নারীদের স্টেম সেক্টরগুলো থেকে বিরত রেখে আমরা আমাদের সম্ভাবনার অর্ধেক হারাচ্ছি।

তবে নারীদের স্টেম সেক্টরে প্রবেশ করলেই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে তা নয়।

প্রফেসর হার্ভে-স্মিথ, যিনি এই দায়িত্বে বিশ্বে প্রথম, তিনি বলেন যে স্টেম ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে কর্মরত মহিলাদের জন্য আরও কিছু করা দরকার।

তিনি বলেন, এখানে যে মূল সংকট রয়েছে তা হচ্ছে নারীদের শুধু স্টেম সেক্টরে প্রবেশ করতে দিলেই হবে না। তাদের সিনিয়র এবং নেতৃত্বের ভূমিকাও আনতে হবে।

ডঃ নওশিনের মতে, সেক্সিজম বা নারী হিসেবে তার লিঙ্গ পরিচয় হল নারীদের অগ্রগতি রোধ করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা।

তিনি বলেন,“পৃথিবী বদলে যাচ্ছে, তবে একজন মহিলা গবেষক হিসাবে এখনও আমি প্রচুর অচেতন পক্ষপাত এবং স্টেরিওটাইপিংয়ের মুখোমুখি হই যা আমি আমার ক্যারিয়ারে বাধা হিসাবে দেখছি।”

তিনি বলেন যে মহিলারা যখন যা চান তার প্রতি যদি তারা দৃঢ় মনোভাব পোষণ করেন, তখন তাদের বিরুদ্ধে বসি (Bossy) এবং কখনও কখনও তাদের আচরণ আক্রমণাত্মক বলে অভিযোগ করা হয়।

অথচ পুরুষদের বেলায় তখন তাদের আলাদাভাবে বর্ণনা করা হয়।

এই সেক্টরের এডভোকেটরা বলেন, ভবিষ্যতে স্টেম ওয়ার্কফোর্সকে পরিবর্তন করতে যেখান থেকে শুরু করতে হবে সেই সেরা জায়গাটি হলো ক্লাসরুম।

সিডনির স্ট্রাফিল্ড গার্লস হাই স্কুলে তরুণ শিক্ষার্থীরা রোবোটিক্স ক্লাস করে। এই স্কুলটি অনেকগুলো স্কুলের মধ্যে একটি যারা স্টেম সেক্টরগুলোকে ফোকাস করে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম গ্রহণ করেছে এবং শিক্ষার্থীরা এই ধারণা বেশ ভালোভাবে গ্রহণ করেছে।

একজন ছাত্রী বলেন, "আমি মনে করি নারীদের অবশ্যই স্টেম সেক্টরে প্রবেশের জন্য উৎসাহ দেওয়া উচিত এবং যতটা সম্ভব এই সেক্টরে তাদের ক্যারিয়ারের সম্ভাবনা নিয়ে ভাবা উচিত।"

পুরো প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

আরো দেখুনঃ




Share