গাজায় তীব্র মানবিক সংকট, যারা বেঁচে আছে তাদের জন্য কোন সাহায্য নেই

MIDEAST ISRAEL PALESTINIANS GAZA CONFLICT

Smoke rises over Al Niusairat refugee camp following Israeli air strikes in the southern Gaza Strip, 10 December 2023. More than 18,000 Palestinians and at least 1,200 Israelis have been killed, according to the Gaza Government media office and the Israel Defense Forces (IDF), since Hamas militants launched an attack against Israel from the Gaza Strip on 07 October, and the Israeli operations in Gaza and the West Bank which followed it. Source: EPA / MOHAMMED SABER/EPA/AAP

গাজায় যুদ্ধ অব্যাহত রয়েছে, এই যুদ্ধে কত মানুষ মারা গেছে তার সংখ্যা অনুমান করা কঠিন। স্বাস্থ্যসেবা বলে আর কিছু নেই, পুরো অবকাঠামো একটি জটিল সংকটজনক পরিস্থিতিতে রয়েছে।


গাজায় যুদ্ধ এখন তৃতীয় মাসে গড়িয়েছে। বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভকারীরা সংঘর্ষে লিপ্ত উভয় পক্ষের প্রতিই তাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।

গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ১৮,০০০ লোক নিহত এবং ৪৯,৫০০ জন আহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে, আরও হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে মৃত পড়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মৃতের সংখ্যা এই ছিটমহলের উত্তর অংশের পরিসংখ্যান আর অন্তর্ভুক্ত করছে না, কারণ ওই অংশটি অ্যাম্বুলেন্সের নাগালের বাইরে এবং সেখানে হাসপাতালগুলির কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

ইসরায়েলের বিমান ও স্থল আক্রমণের কারণেও প্রায় ১.৯ মিলিয়ন মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

মোহাম্মদ সেলিম নামক এক ফিলিস্তিনি ইসরায়েলে পাঁচ দিন আটক থাকার পর মুক্তি পেয়েছেন, আটক থাকা অবস্থায় তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, "আমাদেরকে পাঁচ দিন ধরে মাটিতে ফেলে রাখা হয়, না দিয়েছে খাবার, না পানি, ২৪ ঘণ্টা অত্যাচার করেছে। তারা আমাদের পিঠে বন্দুক দিয়ে আঘাত করে মেরুদন্ড ভেঙে দেয়। তারা আমাকে তাদের জুতা দিয়ে আমার বুকে, মাথায় ও পায়ে আঘাত করে।"

খুব কম সাহায্যের অনুমতি দেওয়ায়, ফিলিস্তিনিরাও এখন খাদ্য, পানি এবং অন্যান্য মৌলিক জিনিসপত্রের তীব্র সংকটের সম্মুখীন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে যে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণের প্রভাব এই অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা পরিস্থিতি বিপর্যস্ত এবং মারাত্মক রোগের বিস্তারের জন্য করুণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

আফগানিস্তান, মরক্কো, কাতার এবং ইয়েমেন প্রস্তাব করেছে চিকিৎসা কর্মীদের এবং তাদের সরবরাহ ব্যবস্থা এবং হাসপাতালগুলি পুনর্নির্মাণের জন্য তহবিল সুরক্ষিত করার জন্য। বিষয়টি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পর্যালোচনা করছে।

তবে সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস বলেছেন যে এই প্রস্তাব বাস্তবায়ন যুদ্ধবিরতি ছাড়া সম্ভব নয়।

এদিকে বিশ্বজুড়ে বেশ কয়েকটি জায়গায় প্রতিবাদ চলছে, সংঘর্ষে লিপ্ত উভয় পক্ষের প্রতি সমর্থন দেখা যাচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ায়, হাজার হাজার মানুষ যারা ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে নবম সপ্তাহের জন্য শহরগুলো জুড়ে সমাবেশ করেছে, তারা গাজায় ইসরায়েলের স্থল ও বিমান আক্রমণ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।

সিডনিতে একজন ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী সাইদ ফাইয়াদ বলেন, "যতক্ষণ না জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি একত্রিত হয়ে ইসরায়েলের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করে, আমরা ততদিন মিছিল করে যাব।"

মেলবোর্নে হাজার হাজার সমর্থক শহরের কেন্দ্রস্থলে ফিলিস্তিনি পতাকা নিয়ে সমাবেশ করেছে।

এদিকে গাজায় হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে ইহুদি সম্প্রদায়ের সদস্যরাও জড়ো হয়েছেন।

ইসরায়েলের বৃহত্তম শহর তেল আবিবে প্রায় ১০০ জন লোক হলুদ ছাতা ধরে এবং হস্টেজ প্লাজার মাঝখানে সূর্যের আকৃতির রেখা তৈরি করে।

তারা একটি ব্যানারও ধরেছিল যাতে লেখা ছিল "আমাদের সূর্যের আলো ফিরিয়ে দিন।"

প্রাথমিকভাবে এটি জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্রতিবাদ কর্মসূচি ছিল, তবে কর্মীরা এটিকে হামাসের হাতে আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির সাথে যুক্ত করতে বেছে নিয়েছে।

ওমর মেটজেগার, যার দাদা-দাদীকে জিম্মি হিসাবে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, "যারা আটকে আছে তারা তো সূর্যের আলো থেকে বঞ্চিত, তাই আমাদের এই শ্লোগানটি যথার্থ।"

এদিকে তুরকিয়েতে, যুদ্ধের প্রতিবাদে রবিবার হাজার হাজার মানুষ ইস্তাম্বুলের হায়া সোফিয়া মসজিদে মিছিল করেছে।

অর্থোডক্স ইহুদি গোষ্ঠী ‘নেতুরেই কারতা’-এর রাব্বিরা স্থানীয় প্রধান ইসলামী এনজিও'র আয়োজিত বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিলেন।

গ্রুপের একজন রাব্বি ডোভিড ফেল্ডম্যান যিনি নিউ ইয়র্ক থেকে এসেছেন, তিনি বলেন, "আমরা একসময় ফিলিস্তিনে শান্তিতে বসবাস করতাম, এখন কেন আমরা এই রক্তপাতের অন্তহীন চক্রের সাক্ষী হচ্ছি?"

এসময় বিক্ষোভকারীরা ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে ব্যানার ও ফিলিস্তিনি পতাকা হাতে নিয়ে স্লোগান দেয়।

প্রতিবেদনটি পড়তে উপরের লিঙ্কে ক্লিক করুন।
আরও শুনুন
Bangla_Mideast Gaza_241023.mp3 image

গাজায় সংঘাতের বিস্তৃতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, সেই সাথে বিমান হামলা আরও তীব্র হয়েছে

SBS Bangla

24/10/202308:41
এসবিএস রেডিও সম্প্রচার-সূচী হালনাগাদ করেছে, এখন থেকে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার, বিকাল ৩টায়, এসবিএস পপদেশীতে আমাদের অনুষ্ঠান শুনুন, লাইভ।

কিংবা, পুরনো সময়সূচীতেও আপনি আমাদের অনুষ্ঠান শোনা চালিয়ে যেতে পারেন। প্রতি সোম ও শনিবার, সন্ধ্যা ৬টায়, এসবিএস-২ তে।

রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: 

এ সম্পর্কে আরও জানতে ভিজিট করুন: 

আমাদেরকে অনুসরণ করুন 




Share