কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়ালো অস্ট্রেলিয়ায়

Apostolos 'Jack' Moulos had wanted to spend his final moments with his family, including his daughters Carolyn (left) and Michelle. (Photo supplied by Carolyn Cox)

Apostolos 'Jack' Moulos had wanted to spend his final moments with his family, including his daughters Carolyn (left) and Michelle. Source: Photo supplied by Carolyn Cox

অস্ট্রেলিয়ায় কোভিডজনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। তার মধ্যে ৭০ শতাংশেরই মৃত্যু হয়েছে গত ছয় মাসে। মৃত্যুহার এভাবে বাড়তে থাকলে তা অস্ট্রেলিয়ানদের মৃত্যুর দ্বিতীয় বড় কারণ হিসাবে দেখা দেবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।


৯৭ বছর বয়স্ক জ্যাক মৌলাস কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আপনজনের হাত ধরে তিনি মারা যাবেন- কেবল এটুকুই ছিল তার শেষ ইচ্ছা। তার মেয়ে ক্যারোলিন কক্স সেই মুহুর্তের কথা স্মরণ করে আজও আক্ষেপ করেন। কোভিডের কারণে তিনি তার বাবার শেষ ইচ্ছাটা পূরণ করতে পারেননি।

মিস কক্স তার বাবার স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, তার বাবা ছিলেন খুবই দয়ালু ও উদার মনের মানুষ। তার কাছ থেকে তিনি অনেক কিছু শিখেছেন। তিনি তার অবসরকালীণ সময়টা বেশ উপভোগ করে কাটিয়েছেন। অবশ্য তার মধ্যবয়সটা ক্যারিয়ার বদলের পেছনে ব্যস্ততায় কেটেছে।

মিস্টার মৌলাস এর আরেক মেয়ে মিশেল মৌলাস সিডনী থেকে চার ঘন্টা গাড়ির দূরত্বে থাকেন। গাড়ি চালিয়ে কোভিড আক্রান্ত পিতাকে দেখতে যাওয়ার পথে তিনি জানতে পারেন, তার বাবা আর নেই।

জ্যাক মৌলাস কোভিডজনিত কারণে মৃত্যু বরণ করা দশ সহস্রাধিক অস্ট্রেলিয়ানদের একজন। গত রোববার ৩ জুলাই অস্ট্রেলিয়া কোভিডজনিত মৃত্যুর সংখ্যা দশ হাজার জন রেকর্ড করেছে।
14 July COVID update in 3 minutes: Australia reports another 78 deaths
More COVID-19 deaths have been recorded across Australia. Source: AAP / Luis Ascui
অস্ট্রেলিয়ায় কোভিডজনিত মৃত্যুর ৭০ ভাগই ঘটেছে গত ছয় মাসে। ২০২১ সালে এই সময়কালে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৩ শত। তার আগের বছরে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৯০৯ জন। গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটির ভাইরোলজিস্ট নাইজেল ম্যাকমিলানের মতে মৃত্যুহার এই গতিতে চলমান থাকলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ  মৃতের সংখ্যা ১৪ হাজারে পৌঁছাবে। আর এভাবে মৃত্যুহারের দিক দিয়ে তা হৃদরোগের ঠিক পরেই স্থান পাবে।

করোণাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণের কারণ হিসাবে করোনাভাইরাসের ওমিক্রণ সাবভ্যারিয়েন্টকে দায়ী করা হচ্ছে যার প্রকোপ কোভিড নিষেধাজ্ঞা শিথিল হওয়ার সাথে সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে। অবশ্য ডেকিন ইউনিভার্সিটির এপিডেমোলজিস্ট ক্যাথেরিন বেনেটের মতে মৃত্যুহার বাড়লেও অস্ট্রেলিয়ায় মাথাপিছু সংক্রমণের হার কম।
ডক্টর ম্যাকমিলান জানান, বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাধিগ্রস্থ ৬৫ বছরোর্ধ্ব ব্যক্তিদেরকেই কেবল এন্টি-ভাইরাল দেওয়া হচ্ছে। তিনি মনে করেন পঞ্চাশোর্ধ্ব যেকোন ব্যক্তিকেই ভাইরাস প্রতিষেধক দেওয়া দরকার। 

এদিকে ফেডারেল স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্ক বাটলার প্রায় ছয় মিলিয়ন উপযুক্ত জনগোষ্ঠীর মানুষকে তৃতীয় ডোজ টিকা বা বুস্টার শট নেওয়ার আহবান জানিয়েছেন। সংক্রমণ ও মৃত্যুহার কমাতে নাইজেল ম্যাকমিলানের মত বিশেষজ্ঞরা বুস্টার শট নেওয়া সহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন।
টিকা গ্রহনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে কুইন্সল্যান্ড। রাজ্যের চল্লিশ ভাগ জনগোষ্ঠী বুস্টার টিকা নেননি; বৃদ্ধনিবাসের ৩৫ ভাগ বাসিন্দা চতুর্থ ডোজ গ্রহণ করেছেন।

ক্যারোলিন কক্স সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান জানিয়ে বলেন,
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মানুষ আজও মারা যাচ্ছে, এ কথা আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। একটা সময়ে আমরা রোগ সংক্রমণের ব্যাপারে অনেক সতর্ক ছিলাম, সেটাতে এখন ভাটা পড়েছে। আমি মনে করি মানুষের মৃত্যু ঠেকাতে আমাদের সবার সামাজিক দূরত্ব রক্ষা আর মাস্ক পরার মত প্রাথমিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা দরকার।

 এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: 

আমাদেরকে অনুসরণ করুন 

Share