বাংলাদেশে লকডাউন ভেঙ্গে ইসলামিক বক্তার জানাজায় লক্ষাধিক লোক

জনপ্রিয় এক ইসলামিক বক্তার জানাজায় লকডাউন ভেঙ্গে অংশ নিলেন লক্ষাধিক লোক। বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ ঘটনা ঘটে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে যেখানে জন-দূরত্ব মেনে চলা হচ্ছে, সেখানে এ রকম আচরণ নিয়ে রীতিমতো বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন হয়েছেন সচেতন ব্যক্তিরা।

In this Saturday, April 18, 2020 photo, thousands of Bangladeshi Muslims gather to attend the funeral of a popular Islamic preacher defying a nationwide lockdown to curb the spread of the new coronavirus at the central district of Brahmanbaria, Bangladesh

Thousands of Bangladeshi Muslims gather to attend the funeral of a popular Islamic preacher defying a nationwide lockdown on Saturday, April 18, 2020. Source: AAP Image/AP Photo/Masuk Hridoy

বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রখ্যাত ইসলামিক বক্তা, খেলাফত মজলিশের নায়েব আমীর মাওলানা যোবায়ের আহমেদ আনসারী গত শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন। গত শনিবার, ১৮ এপ্রিল তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে লকডাউন করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা লকডাউন করা হয়েছে গত ১১ এপ্রিল থেকে। তারপরও, আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজার হাজার মুসলমান ছুটে আসেন মাওলানা যোবায়ের আহমেদ আনসারীর অংশ নিতে।

-এর একটি প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফরহাদ এবং ব্রাহ্মনবাড়িয়ার পুলিশ মুখপাত্র ইমতিয়াজ আহমেদ-এর সূত্র উল্লেখ করে জন-সমাগমের এই বিশালত্বের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ৫ জনের বেশি একত্রিত হয়ে প্রার্থনা করতে পারে না।

বিবিসি বাংলাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন রিপোর্টে দেখা যায়, এতো লোক-সমাগম হবে তা কর্তৃপক্ষ আগেভাগে ধারণা করতে পারে নি। সেজন্য, নেওয়া হয় নি কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা।

ধারণা করা হচ্ছে যে, সামাজিক-যোগাযোগ-মাধ্যম যেমন, ফেসবুকের মাধ্যমে তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এ রকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদৎ হোসেন টিটু  বলেন, মাওলানা যোবায়ের আহমেদ আনসারী সেখানে একটি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও স্থানীয়ভাবে ব্যাপক জনপ্রিয় ছিলেন।

“গতকাল (শুক্রবার) ঢাকায় মারা যাওয়ার পর রাতে তার মরদেহ মাদ্রাসায় নিয়ে আসা হয়।”

“আমরা রাতেই গিয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করি। তারাও জানায় জানাজায় বড় ধরনের জমায়েত করা হবে না।”

কিন্তু, পরিকল্পনা না থাকলেও সকালে জানাজার আগে মাদ্রাসার মাঠে হঠাৎ করেই কয়েক হাজার মানুষ আসা শুরু করে, বলেন শাহাদৎ হোসেন টিটু।

এই ঘটনায় সারা বাংলাদেশে এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে সচেতন ব্যক্তিরা। বিশেষত, সামাজিক-যোগাযোগ-মাধ্যমগুলোতে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় মেতে ওঠেন অনেকেই।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সচেতন নাগরিক কমিটির সহসভাপতি আব্দুন নুর বলেন,

“এত লোক সমাগমে অবশ্যই প্রশাসনের ব্যর্থতা রয়েছে। তারা যদি আরো সক্রিয় হতো তাহলে এত ব্যাপক সমাগম ঘটতো না। এখন এটা খুবই শঙ্কার বিষয় যে, এখান থেকে কত জেলায় সংক্রমণ ঘটবে তা কেউ বলতে পারে না।”

ইতোমধ্যে সরাইল উপজেলা ও তার আশেপাশের আটটি গ্রামে লকডাউন করা হয়েছে এবং সেখানকার অধিবাসীদেরকে ঘরে থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হওয়ায় তিন জন পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করেছে সরকার। এরা হলেন, সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদৎ হোসেন টিটু, সরাইল সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. মাসুদ রানা এবং সরাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নুরুল হক। এ নিয়েও সামাজিক-যোগাযোগ-মাধ্যমে লোকজন তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।
এ বিষয়ে আরও তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র সোহেল রানা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে ইতোপূর্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। সেখানে এখন পর্যন্ত ১০ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে।

সিভিল সার্জন ডাক্তার মোঃ একরাম উল্লাহ্ বিবিসি বাংলাকে বলেন, এর মধ্যেই ব্রাহ্মণ বাড়িয়ায় অনেক করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। এই জনসমাগমের ফলে সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

রবিবার পর্যন্ত বাংলাদেশে ২,৪৫৬ জন করোনাভাইরাসে সুনিশ্চিতভাবে আক্রান্ত হয়েছেন এবং এদের মাঝে ৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে, প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
alc-covid-gatherings-bangla
Source: SBS
অস্ট্রেলিয়ানদেরকে অবশ্যই পরস্পরের মাঝে কমপক্ষে ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্যদের সঙ্গে হলে দু’জনের বেশি একত্রিত হওয়া যাবে না।

আপনি যদি মনে করেন যে, আপনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, তাহলে আপনার ডাক্তারকে কল করুন। ডাক্তারের কাছে যাবেন না। আপনি ন্যাশনাল করোনাভাইরাস হেলথ ইনফরমেশন হটলাইনেও কল করতে পারেন এই নম্বরে: 1800 020 080

alc covid shopping bangla
Source: SBS


আপনার যদি শ্বাস-কষ্ট কিংবা মেডিকেল ইমার্জেন্সি দেখা দেয়, তাহলে 000 নম্বরে কল করুন।

আপনার ভাষায় কোভিড-১৯ এর সর্বশেষ আপডেট জানাতে এসবিএস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ৬৩ টি ভাষায় এ বিষয়ক সংবাদ ও তথ্য পাবেন। ভিজিট করুন: .

alc-covid-gatherings-bangla
Source: SBS


বাংলায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বিষয়ক আমাদের সর্বশেষ আপডেটের জন্য ভিজিট করুন:

ALC Covid-19 social messaging bangla
Source: SBS
Follow SBS Bangla on .



Share
Published 20 April 2020 1:57pm
Updated 20 April 2020 4:03pm
By Sikder Taher Ahmad

Share this with family and friends