তিন বাংলাদেশিসহ চার অভিবাসী কর্মীকে কম মজুরি দেয়ার অভিযোগে একটি পিজ্জার দোকানকে আর্থিক জরিমানার আদেশ

অভিবাসী কর্মীদেরকে ঠকানোর এবং তা গোপন করার অভিযোগে হোবার্টে একটি পিজার দোকানকে একশত হাজার ডলারের বেশি জরিমানা করা হয়েছে। আর, ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসী কর্মীদের প্রাপ্য অর্থ পরিশোধের আদেশ দেওয়া হয়েছে। ফেয়ার ওয়ার্ক ওমবাডসম্যানের মিডিয়া রিলিজ থেকে জানা যায় যে, নর্থ হোবার্টের ক্রাস্ট পিজা নামক দোকানটি পরিচালনা করতো Q-H-A Foods। তারা বাংলাদেশ এবং ভারত থেকে আগত চারজন কর্মীকে ঘণ্টায় মাত্র ১২ ডলার রেটে কাজ করাতো। তাছাড়া, ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত প্রতিটি পিজা ডেলিভারির জন্য মাত্র ১ ডলার করে দিত।

Fair Work Ombudsman released a new app for Australian Workers.

A Fair Work Ombudsman office Source: Fair Work Ombudsman

Q-H-A Foods এর ডাইরেক্টর এবং শেয়ারহোল্ডার আনন্দ কুমারাস্বামী এবং হরিদাস রঘুরাম ওমবাডসম্যানের কাছে মজুরি ঠকানোর এই বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করেন। ফেয়ার ওয়ার্ক ইন্সপেক্টরদের কাছে পেশ করার আগে তারা রেকর্ডস থেকে কর্মীদের কাজের হিসাব মুছে দেন।

তারা জানতেন যে, এই কর্মীরা নির্ধারিত সর্বনিম্ন মজুরি পাওয়ার অধিকারী ছিল। কিন্তু, তারা তাদেরকে এই সর্বনিম্ন হারের চেয়ে অনেক কম মজুরি দিতেন। অস্ট্রেলিয়ান কর্মীরা একই কাজ করে যে মজুরি পেত তার থেকে অনেক কম হারে তাদেরকে মজুরি দেওয়া হতো। তারা পিজা তৈরি করতেন, সরবরাহ করতেন এবং গ্রাহকসেবার পাশাপাশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজও করতেন।

২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী হিসেবে পড়তে আসা এই চার কর্মীকে নগদ অর্থ প্রদান করা হতো এবং তাদের কোন পে-স্লিপ দেয়া হতো না। তাছাড়া অস্ট্রেলিয়ান কর্মীদের তুলনায় আরও দূরবর্তী জায়গায় পিজ্জা সরবরাহ করার জন্য তারা নিয়োজিত ছিল যা  কিনা কর্মক্ষেত্রের আইন লঙ্ঘন। 

অথচ, ক্রাস্ট পিজ্জা তাদের অস্ট্রেলিয়ান কর্মচারীদের সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে কাজের জন্য নির্ধারিত ন্যূনতম বেতন এবং অন্যান্য ভাতা সঠিকভাবে দিয়েছে।

প্রাপ্তবয়স্ক অস্ট্রেলিয়ান কর্মীদের সাধারণ ছুটির দিনে ঘণ্টাপ্রতি ১৮ ডলার এবং সরকারি ছুটিতে ৪৬.৩১ ডলার করে দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ান কর্মীদের তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বেতন দেয়া হয়েছে এবং পে-স্লিপও দেওয়া হয়েছে।

Q-H-A Foods, মিঃ কুমারাসামি এবং মিঃ রঘুরাম তদন্তের সময় পরিদর্শকদের তথ্য দেয়ার ক্ষেত্রেও বিদেশী চার কর্মীর কাজকর্মের রেকর্ড মুছে ফেলে বা পরিবর্তন করে  অসদাচরণ করেন যা আইনত দণ্ডনীয়। 

বিচারক বারবারা বেকার বলেন যে অস্ট্রেলিয়ার কর্মক্ষেত্র আইন সম্পর্কে অভিবাসী শিক্ষার্থী-কর্মীরা ভালো করে জানতেন না এবং এই সুযোগটিই মালিকপক্ষ গ্রহণ করেছে।

টাসমানিয়াতে বিদেশী কর্মীদের প্রাপ্য মজুরির চেয়ে কম দেয়ার জন্য জরিমানা করার এটি দ্বিতীয় ঘটনা। তাছাড়া, ২০১৫ সালে সিডনিতে এবং গত বছর মেলবোর্নের পর ক্রাস্ট পিজ্জার বিরুদ্ধে ফেয়ার ওয়ার্ক ওমবাডসম্যান এ নিয়ে তৃতীয়বারের মত আইনি পদক্ষেপ নিলো।

Share
Published 4 November 2019 6:28pm
Updated 4 November 2019 6:35pm
By Shahan Alam
Source: Fair Work Ombudsman

Share this with family and friends