জবট্রেইনার প্রোগ্রাম কী? কারা এত্থেকে সুবিধা পাবেন?

প্রথমে ছিল জবসিকার। এটি আগে পরিচিত ছিল নিউস্টার্ট নামে। এরপর এল জবকিপার ও তারপর জবমেকার। এখন এল জবট্রেইনার। সরকারের এই নতুন পরিকল্পনায় কী আছে?

Australian Prime Minister Scott Morrison speaks to the media during a press conference at Parliament House in Canberra, Thursday, July 16, 2020. (AAP Image/Lukas Coch) NO ARCHIVING

Australian Prime Minister Scott Morrison says there are more than 3,000 ADF personnel assisting in the fight against coronavirus. Source: AAP

নামে ২ বিলিয়ন ডলারের নতুন একটি স্কিলস প্যাকেজ চালু করার ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার।

এর আগে ছিল ৭০ বিলিয়ন ডলারের বেতন-ভর্তুকি পরিকল্পনা জবকিপার। ছিল জবসিকার, যার মাধ্যমে সপ্তাহে ৫৫০ ডলারের দ্বিগুণ আনএমপ্লয়মেন্ট বেনিফিট দেওয়া হতো। অন্যান্য গভার্নমেন্ট ইনকাম পেমেন্টসহ এর জন্য বরাদ্দ ছিল ১৪ বিলিয়ন ডলার। এছাড়াও ছিল জবমেকার প্রোগ্রাম। এন্টারটেইনমেন্ট, আর্টস এবং স্ক্রিন খাতগুলোতে প্রণোদনার জন্য এতে বরাদ্দ ছিল ২৫০ মিলিয়ন ডলার।

জবট্রেইনার প্যাকেজে দু’টি অংশ রয়েছে।

প্রথম অংশে বরাদ্দ করা হয়েছে ১.৫ বিলিয়ন ডলার। যারা ইতোমধ্যে এপ্রেন্টিস বা শিক্ষানবিশ এবং ট্রেইনি বা প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন তাদেরকে কাজে নিয়োজিত রাখতে এই অর্থ ব্যবহার করা হবে।

দ্বিতীয় অংশটির লক্ষ্য স্কুল লিভার বা স্কুল ছেড়ে আসা ব্যক্তিদের জন্য, যারা কাজ খুঁজছেন। এর মাধ্যমে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হবে ভোকেশনাল এডুকেশন ও ট্রেইনিং কোর্সগুলোর জন্য। স্টেট এবং টেরিটোরিগুলো থেকে অর্থায়ন করার শর্ত-সাপেক্ষে ফেডারাল সরকার এই অর্থায়ন করবে।

বেতন ভর্তুকি

১.৫ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হবে বর্তমানে শিক্ষানবিশ এবং প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে কর্মরতদের বেতন-ভর্তুকি হিসেবে। এর মাধ্যমে আগে বিদ্যমান সাপোর্টিং এপ্রেন্টিসেস অ্যান্ড ট্রেইনিস প্রোগ্রামটি বিস্তৃত করা হবে।

এর মাধ্যমে যোগ্য নিয়োগদাতারা তাদের শিক্ষানবিশ ও প্রশিক্ষণার্থী কর্মীদের বেতনের অর্ধেক পাবেন। কোয়ার্টারলি ৭,০০০ ডলার (বছরে ২৮,০০০ ডলার) পর্যন্ত পাওয়া যাবে। জবকিপার প্রোগ্রামে পাওয়া যেত কোয়ার্টারলি ৯,৭৫০ ডলার যা কিনা সপ্তাহে ৭৫০ ডলার ফ্লাট রেটের সমান।

এর উপযুক্ততা লাভের জন্য জবকিপার প্রোগ্রামের মতো এতে নিয়োগদাতাদেরকে তাদের টার্নওভার বা বার্ষিক লেনদেনের পরিমাণ কমে গেছে বলে দেখাতে হবে না।

প্রতিষ্ঠানের আকার অনুসারে মানদণ্ড নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এই পরিকল্পনাটি অনেক উদার। এর আগে যে-সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ২০ জনের কম কর্মী ছিল তারাই ভর্তুকি পাওয়ার জন্য উপযুক্ত বলে বিবেচিত হতো। এখন এই সীমা ২০০ জন।

ফেডারাল সরকার ধারণা করছে প্রায় ৯০,০০০ ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান এই স্কিমটি ব্যবহার করবে এবং এর মাধ্যমে ১৮০,০০০ শিক্ষানবিশ কিংবা প্রশিক্ষণার্থী সহায়তা পাবে। এই স্কিমটি ৩১ মার্চ ২০২১ পর্যন্ত চলবে।



ভোকেশনাল শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ

জবট্রেইনার ঘোষণার দ্বিতীয় অংশে আশা করা হচ্ছে, বিনামূল্যে কিংবা স্বল্প-মূল্যে অতিরিক্ত ৩৪০,০০০ টি কোর্স প্লেসের ব্যবস্থা করার। এটি সেপ্টেম্বর ২০২০ থেকে শুরু করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি নির্ভর করবে ফেডারাল সরকারের ৫০০ মিলিয়ন ডলারের অর্থায়নের সঙ্গে স্টেট ও টেরিটোরিগুলো সাযুজ্য রেখে অবদান রাখে কিনা তার উপরে।

ন্যাশনাল স্কিলস কমিশন দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করবে এবং যে-সব বিষয়ে কোর্সগুলোতে অর্থায়ন করার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দিতে হবে সেগুলো নির্ধারণ করবে। যেমন, হেলথ কেয়ার ও সোশ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স, ট্রান্সপোর্ট, ওয়্যারহাউজিং, ম্যানুফ্যাকচারিং, রিটেইল এবং হোলসেল ট্রেড।

৩৪০,০০০ ট্রেইনিং প্লেসের মধ্যে বহু সংখ্যকই ছোট ছোট কোর্স। এগুলো স্কিলস সেটস নামে পরিচিত এবং এগুলো ফুল কোয়ালিফিকেশনের অংশ-স্বরূপ।

এসব স্কিলস সেটগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নতুন শিল্প-খাতে প্রবেশ করতে পারবে এবং পরিপূর্ণভাবে যোগ্যতা অর্জন করার সুযোগ পাবে। বিদ্যমান অর্থায়ন ও ভর্তুকির ব্যবস্থার মাধ্যমে তারা এই সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারবে।

পাবলিক, অলাভজনক এবং প্রাইভেট ট্রেইনিং অর্গানাইজেশনগুলো এসব কোর্স পরিচালনার জন্য অর্থায়ন চেয়ে আবেদন করতে পারবে।

ভোকেশনাল এডুকেশন এবং ট্রেইনিং সিস্টেম-এ গত এক দশক ধরে বহু সমস্যা রয়েছে। এসবের মধ্যে মূলনীতিগত সমস্যাও রয়েছে যার প্রভাব পড়েছে এগুলোর পেছনে অর্থায়নের ক্ষেত্রে।

এই খাতে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন করা হলেও ২০১২ সালে এই খাতে যে বরাদ্দ ছিল, এটি এখনও তার চেয়ে কম।



জবট্রেইনারে কী নেই?

নতুন শিক্ষানবিশ কিংবা প্রশিক্ষণার্থী গ্রহণে নিয়োগদাতাদেরকে উৎসাহিত করার জন্য কোনো আর্থিক প্রণোদনা বা ভর্তুকি নেই এই জবট্রেইনার প্রোগ্রামে।

২০২০ সালের এপ্রিল এবং মে মাসে নতুন শিক্ষানবিশ এবং প্রশিক্ষণার্থীদের যে সংখ্যা ছিল তা ২০১৯ সালের একই সময়ের তুলনায় ৩৩ শতাংশ কম।

শিক্ষানবিশ এবং প্রশিক্ষণার্থীদের সংখ্যা হ্রাস পেলে দীর্ঘমেয়াদে তা নেতিবাচক প্রভাব রাখে বলে ইতোপূর্বে দেখিয়েছিল মিচেল ইনস্টিটিউট।

এটি বিশেষভাবে স্কুল ছেড়ে আসাদের জন্য সত্য। প্রায় ১২ শতাংশ স্কুল লিভার কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের জন্য এপ্রেন্টিসশিপ বা ট্রেইনিশিপের পথ অবলম্বন করে।

স্কুল থেকে কর্মক্ষেত্রে সাফল্যের সঙ্গে উত্তরণ না ঘটলে দীর্ঘমেয়াদে সমস্যা দেখা দেয়। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদে কর্মহীনতা দেখা দেয়, উচ্চ হারে স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয় এবং কর্মক্ষেত্রে সারা জীবন নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়।
নতুন শিক্ষানবিশ গ্রহণ করার সংখ্যা কম হলে পরবর্তীতে দক্ষ কর্মীর সংখ্যাও কমে যায়। শিক্ষানবিশীকাল সাধারণত চার বছরের জন্য হয়ে থাকে। এর মানে হলো, নতুন শিক্ষানবিশের সংখ্যা কমানো হলে চার বছর পরে স্বল্প সংখ্যক শিক্ষানবিশই শিক্ষা গ্রহণ সম্পন্ন করবে।

জবট্রেইনার নীতিমালা সম্ভবত বর্তমান সকল শিক্ষানবিশ এবং প্রশিক্ষণার্থীদেরকে কাজে নিয়োজিত রাখার জন্য যথেষ্ট হবে না। কাজ কমে যাওয়ার ফলে এবং অনিশ্চিত অবস্থার কারণে নিয়োগদাতারা হয়তো এখনও ট্রেইনিং কন্ট্রাক্ট সাময়িকভাবে কিংবা একেবারেই বাতিল করার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিবেন।

তবে, এ রকম ক্ষয়-ক্ষতি সর্বনিম্নে নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে এই সহায়ক প্রকল্পটি নিঃসন্দেহে ভূমিকা রাখবে।

Peter Hurley is a Policy Fellow at the Mitchell Institute at Victoria University. He does not work for, consult, own shares in or receive funding from any company or organisation that would benefit from this article, and has disclosed no relevant affiliations beyond their academic appointment.

Follow SBS Bangla on .

Share
Published 17 July 2020 6:43pm
Updated 17 July 2020 6:45pm
By Peter Hurley
Presented by Sikder Taher Ahmad
Source: The Conversation


Share this with family and friends